Published By: Rupam Dutta
Last Updated: 13 May, 2024, 7:40am (IST)
কোলকাতা: ইউসুফ পাঠান(Yusuf Pathan) এবার রাজনীতিতে, তাও আবার নিজের রাজ্য গুজরাট ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির ময়দানে।
ক্রিকেট এবং রাজনীতি সম্পূর্ন আলাদা দুটি ময়দান। একেবারে আলাদা পরিবেশ। কিন্তু তিনি তো বিগত দু, দু’টি বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের(Indian Cricket Team) সদস্য ছিলেন। তিনি বহু ম্যাচের রং বদলে দেওয়া নায়ক। তিনি আবার সমাজ সেবকও। হ্যাঁ, তিনি হলেন ইউসুফ পাঠান।
Table of Contents
ক্রিকেটার ইউসুফ(Yusuf Pathan)
ক্রিকেট মাঠে জেতা যেমন কঠিন ব্যাপার, রাজনীতির ময়দানে কাজটি করা ঠিক তেমনি কঠিন। তবে জয়লাভ করা, এই ব্যাপরটি ইউসুফের কাছে কিন্তু নতুন নয়। তিনি যখন আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট খেলতেন, বহু মাচের রং বদলে দিয়েছেন বা হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাময় এমন অনেক ম্যাচকে একা হাতে জয়ের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। কখনও চোক ধাঁধানো ব্যাটিং করে, আবার কখনও অসাধারান বোলিং করে সেই কাজটি করেছেন। ভারতীয় ক্রিকেট দলের( Indian Cricket Team ) সদস্য হিসেবে যখন মাঠে খেলতেন তখন নিজেকে পুরো উজাড় করে দিতেন। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে জয়লাভ ব্যাপারটি তার কাছে পূর্ব পরিচিত। কিন্তু ক্রিকেটের ময়দান এবং রাজনীতির ময়দান সম্পূর্ন ভিন্ন দুটি ক্ষেত্র। এবার রাজনীতির ময়দানে ইউসুফের পারফরম্যান্স কেমন হয় সেটাই দেখার।
ইউসুফের ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ
গুজরাটের বরোদা থেকে বাংলার বহরমপুর এর দূরত্ব অনেক। দেশের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্ব প্রান্ত। মসজিদের মৌলবির পুত্র মাঝবয়সে এসে একদম হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবেই রাজনীতিতে নাম লেখালেন। মেহমুদ খান পাঠানের দুই পুত্র-ইউসুফ(Yusuf Pathan) এবং ইরফান( Irfan Pathan )। ইউসুফ বড় এবং ইরফান ছোট। মেহমুদ খান পাঠান স্থানীয় একটি মসজিদের দেখাশোনার কাজ করেন। তিনি একজন অত্যন্ত সৎ এবং ধার্মিক মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মসজিদের পাশে ছোট এক চিলতে ঘরেই পাঠান পরিবার বসবাস করতেন। আর রাস্তায়,রাস্তায় এবং পাড়ার এ’গলি থেকে ও’গলি দিনভর দুই ভাই ক্রিকেট খেলতেন। এভাবে খেলতে খেলতেই পাড়ার গলি ছেড়ে স্থানীয় ক্রিকেট মাঠে প্রবেশ। সেখান থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দুনিয়ায় পা রাখা এবং আলোড়ন ফেলে দেওয়া সবটাই এক রূপকথার গল্পের মতো।
ব্যাক্তি হিসেবে ইউসুফ(Yusuf Pathan)
দুই ভাই ই অলরাউন্ডর। বড় ভাই ইউসুফ ডান হাতে ব্যাট করেন এবং ওই হাতেই অফস্পিন বল। ছোট ভাই ইরফান বাঁহাতি ব্যাটার এবং ওই হাতেই জোরে বল করেন। খেলার ধরন ভিন্ন হলেও, অনক অনেক বিষয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রয়েছে। দুই ভাইয়েরই লম্বা পেটাই চেহারা এবং রয়েছ অসম্ভব গায়ের জোর। দুই ভাই ই বড় বড় ছক্কা মারায় পারদর্শী। তবে চরিত্রের দিক থেকে দুই ভাই সম্পূর্ন ভিন্ন মেরুর। ছোট ভাই ইরফান ফ্যাসান দুনিয়ায় পা রেখেছেন এবং সিনেমায় অভিনয়ও করেছেন। সেক্ষেত্রে বড় ভাই ইউসুফ বড়ই লাজুক স্বভাবের এবং সবসময় নিজেকে গুটিয়ে রাখেন।
রাজনীতিতে ইউসুফ(Yusuf Pathan)
এমন চরিত্রের ইউসুফকে কিন্তু রাজনীতির ময়দানে খোলস ছেড়ে বেরোতে হবে। তিনি নিজেও জানেন কাজটি খুব সহজ নয়। তাই টি২০ লিগ চলার মধ্যেও নিজের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন একদম নিঃশব্দে। তিনি যে দলে নাম লিখিয়েছেন, সেই দলের পক্ষ থেকে তার শিক্ষানবিশ পর্ব শুরু হয়েছে। ইউসুফও মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করছেন। তাকে একেবারে চোস্ত করে তোলা হচ্ছে, জনতার উদ্দ্যেশে কিভাবে কথা বলতে হবে? কি বলতে হবে? কতটা বলতে হবে? এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিতে হবে? এই সমস্ত ব্যাপারে। বাংলার বহরমপুর তার কাছে সম্পূর্ন অচেনা, অজানা জায়গা। তবে এই ইন্টারনেটের দুনিয়ায় সারা পৃথিবীটাই তো এখন হাতের মুঠোয়। আর তাই তিনি তার জীবনের ৪১তম বসন্ত উপভোগ করছেন দুটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে। তিনি হারা-জেতার কথা না ভেবে, ময়দানে লড়াইয়ের কথা ভাবছেন।
সমাজসেবায় ইউসুফ(Yusuf Pathan)
বড়ই উদার মনের মানুষ ইউসুফ। তিনি যে এলাকায় বড় হয়েছেন, কোভিডের সময়, সেই এলাকার গরীব মানুষদের মধ্যে ত্রান বিলি করেছেন দিনের পর দিন ছোট ভাই ইরফানকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি ভুলে জাননি তার ফেলে আসা সেই পুরনো দিন গুলিকে, মানুষ গুলোকে এবং তার পুরনো বাসস্থানকে। আর তাই, একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এই মানকে দূরে সরিয়ে তিনি ঐ বিপদের দিনে সমাজের সাধারন মানুষের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধা করেননি।
ইউসুফের প্রতিশ্রুতি
বাংলার বহরমপুর তার কাছে অচেনা, অজানা হলেও তিনি জনতার পাশে থাকার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ, এমনটাই জানালেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের একটি আঞ্চলিক দলের পদ পার্থী। আর এখন হঠাৎ করে রাজনীতির ময়দানে ঢুকে পড়া ইউসুফের, রাজনৈতিক আঙ্গিনায় নিজেকে মানিয়ে নেওয়াটাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।