Headlines

তরমুজের মতো মিষ্টি রসালো ফল কি ডায়াবিটিস রোগীদের খাওয়া চলে ? বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কি বলছেন….

Published By: Soumya Mukherjee

Last Updated: 8 June, 2024, 10:30 am (IST)

কোলকাতাঃ- তরমুজ(Watermelon) একটি জনপ্রিয় ফল যা গ্রীষ্মকালে খুবই উপভোগ্য। এটি জলের উচ্চ পরিমাণ এবং মিষ্টি স্বাদের জন্য বিখ্যাত। ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রে তরমুজ খাওয়া উপযুক্ত কিনা, তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করা যেতে পারে।

তরমুজের(Watermelon) পুষ্টিগুণ

তরমুজে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তরমুজের প্রধান পুষ্টিগুণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  1. জল: তরমুজের প্রায় ৯০% জল, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
  2. ভিটামিন সি: এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  3. ভিটামিন এ: চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  4. পটাশিয়াম: শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  5. ম্যাগনেসিয়াম: পেশীর কাজ এবং স্নায়ুবিক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয়।
  6. লাইকোপিন: একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হৃদরোগ এবং কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য তরমুজ(Watermelon)

Watermelon

গ্র্রীষ্মের দাবানলে যখন চারিপাশ জ্বলতে থাকে। খুব গরমে যখন মানুষ অতিষ্ঠ। এই সময় তরমুজের মতো ফলের কোনো বিকল্প হয় না বা অন্য কোন ফলের সঙ্গে এই ফলের তুলনা করা যায় না। কারন এই রসালো ফল একদিকে যেমন মানুষের তৃষ্ণা মেটায়, অন্যদিকে তেমনি মানব দেহে জলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহয্য করে। কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের এই ফল কি খাওয়া যায়? তাদের মনে এই প্রশ্ন থাকে।

ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য তরমুজ খাওয়া উপযুক্ত কিনা, তা নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর:

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) এবং গ্লাইসেমিক লোড (GL)

তরমুজের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) প্রায় ৭২, যা তুলনামূলকভাবে বেশি। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হলো একটি স্কেল যা খাবারের রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ানোর ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। কিন্তু তরমুজের গ্লাইসেমিক লোড (GL) অনেক কম, কারণ এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে। গ্লাইসেমিক লোড কম হওয়ায় তরমুজ ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য একেবারে নিষিদ্ধ নয়।

পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ

ডায়াবিটিস রোগীদের তরমুজ খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। অল্প পরিমাণে তরমুজ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে না।

পুষ্টিবিদ জার্লিন জোন্স বলেছেন, ফল হিসাবে গোটা তরমুজ(Watermelon) খেতেই পারেন ডায়াবিটিস রোগীরা। তবে একসঙ্গে পুরোটা না খেয়ে কিছুটা সময় অন্তর অন্তর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারন একসঙ্গে পুরোটা খেলে রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেইজন্য শরীরের রক্তে কতটা পরিমান শর্করা প্রবেশ করবে তা নির্ভর করে একসঙ্গে কতটা পরিমান তরমুজ খাওয়া হচ্ছে উপর। আর সেইসঙ্গে তরমুজকে রস বানিয়ে খাওয়ার উপরও নিষেধ আরোপ করেছেন ডায়াবিটিস রোগীদের।

পুষ্টি গ্রহণের ভারসাম্য

তরমুজ(Watermelon) খাওয়ার সময় অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন। প্রোটিন এবং ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন বাদাম বা বীজের সঙ্গে তরমুজ খাওয়া হলে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া

প্রতিটি মানুষের দেহের প্রতিক্রিয়া আলাদা হতে পারে। তাই তরমুজ খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবিটিস রোগীদের ডায়েট প্ল্যানে তরমুজ যুক্ত করার আগে একজন ডায়েটিশিয়ান বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

তরমুজের(Watermelon) অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

তরমুজ(Watermelon) কোনো অপকার তো করেই না, বরং তরমুজ খেলে ডায়াবিটিস রোগীদের উপকারই হয় বেশী।

হাইড্রেশন

তরমুজের(Watermelon) উচ্চ জল উপাদান শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে, যা গ্রীষ্মকালে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান

তরমুজে(Watermelon) উপস্থিত লাইকোপিন, ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

চোখের স্বাস্থ্য

তরমুজ(Watermelon) ভিটামিন ‘এ’ তে সমৃদ্ধ। ভিটামিন ‘এ’ ডায়াবিটিস রোগীদের দৃষ্টিশক্তির উন্নতি করে এবং চোখের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়।

হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য

লাইকোপিন হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। পটাশিয়ামও হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো।

হজম প্রক্রিয়া

তরমুজে ফাইবারের পরিমাণ কম হলেও, এতে থাকা পানি হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য

তরমুজে থাকা ভিটামিন এ এবং সি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

তরমুজে(Watermelon) ক্যালোরি কম থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো একটি খাবার হতে পারে।

উপসংহার

তরমুজ(Watermelon) একটি পুষ্টিকর এবং স্বাদযুক্ত ফল, যা শরীরের জন্য নানা উপকারিতা প্রদান করে। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য তরমুজ খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না হলেও পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরমুজ খাওয়ার আগে একজন ডায়েটিশিয়ান বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত যাতে ডায়াবিটিস রোগীরা নিরাপদে এই সুস্বাদু ফল উপভোগ করতে পারেন।

ডিসক্লেইমার

লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ভারতের সবচেয়ে সুন্দর রেল স্টেশনগুলি… ভারতের কম পরিচিত উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থলগুলি… ভারতের ব্যস্ত রেল স্টেশনগুলি… দক্ষিণ ভারতীয় প্রাতঃরাশের সেরা খাবারগুলি… ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকারী দেশগুলি…