Published by: Subhra Chatterjee
Last Updated: 9 June, 2024, 6:30pm (IST)
নিউ জলপাইগুড়ি: কোলকাতা থেকে এক ট্রেনে সিকিম(Sikkim)। এটা কোনো রূপকথার গল্প নয়। সিকিমের রংপো স্টেশন নির্মানকাজ উদ্বোধন হওয়ার পর বাস্তবে এমটাই আশা করছে পর্যটক থেকে ব্যাবসায়ী মহল।
Table of Contents
কোলকাতা থেকে সিকিম(Sikkim) পর্যন্ত রেল লাইনের বিস্তার
ভারতে পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম রেলওয়ে। বর্তমান সময়ে সড়ক পরিবহন ও বিমান যোগাযোগের পরিপূরক হিসেবে রেলওয়ের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সিকিম(Sikkim) রেল যোগাযোগের বাইরে থাকায় সেখানকার জনগণের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল কিছুটা কঠিন। তবে এই সঙ্কটের অবসান ঘটাতে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ কোলকাতা থেকে সিকিম পর্যন্ত রেল লাইনের বিস্তার করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
রেল লাইনের পরিকল্পনা ও নির্মাণ
কোলকাতা থেকে সিকিম(Sikkim) পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা অনেক বছর ধরেই চলছিল। এই রেল লাইনের বিস্তারের মাধ্যমে পর্যটক এবং স্থানীয় জনগণের জন্য যাত্রা সহজ হবে। এই রেল লাইন নির্মাণে ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক বাধা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে । পাহাড়ি অঞ্চল, নদী পারাপার, এবং প্রকৃতির অনুকূলতা বজায় রেখে এই রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভারতের আভ্যন্তরীন সুরক্ষার দিক থেকে চিনের সীমানা ঘেঁসে থাকা সিকিম রাজনৈতিক ও ভূকৌশলভাবে অতন্ত্য গুরুত্বর্পূর্ণ একটি রাজ্য। রেলের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, এই পুরো প্রকল্পটি তিন দফায় সম্পন্ন করা হবে।প্রথম দফায় বাংলার সেবক থেকে সিকিমের রংপো, দ্বিতীয় দফায় রংপো থেকে গ্যাংটক ও সবশেষে গ্যাংটক থেকে নাথু লা পর্যন্ত অংশে রেলপথ বসানো হবে। এবং তা ২০৩০ সালের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। যার সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেলপথের কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এই অংশের বেশির ভাগটাই বাংলার মধ্যে এবং সামান্য অংশই সিকিমের মধ্যে পড়েছে। এই অংশটুকুর মধ্যে মোট পাঁচটি স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি স্টেশন পড়েছে বাংলায় এবং বাকি দুটি সিকিমে। বাংলার স্টেশনগুলি হল- সেবক, রিয়াং ও তিস্তা বাজার। সিকিমের দুটো হল- মেলি ও রংপো।
রংপো স্টেশন নির্মানকাজ উদ্বোধন
কোলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি। তারপর ওখান থেকে ট্রেনে চড়ে সোজা সিকিমের নাথু লা । এটা কোনোও কল্পনার রেলপথ নয়, সিকিমের(Sikkim) রংপো স্টেশন নির্মানকাজ উদ্বোধনের পর এটাই হতে যাচ্ছে বাস্তব সত্যি। রংপো স্টেশন নির্মানকাজ উদ্বোধন দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এর মাধ্যমে পর্যটক এবং স্থানীয় জনগণের জন্য সিকিমে যাত্রা আরও সহজ এবং আরামদায়ক হবে।
ভারতের রেল মানচিত্রে সিকিমের প্রবেশ
সিকিমকে(Sikkim) রেল যোগাযোগের আওতায় আনা ভারতের রেল মানচিত্রে এক নতুন অধ্যায় সংযোজন করেছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সিকিমের সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সিকিমের অর্থনীতি, পর্যটন, এবং সমাজিক অবস্থা আরও উন্নত হবে।
কোলকাতা থেকে সরাসরি সিকিম যাত্রা
ভারতীয় রেলের এই অসাধ্য সাধন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে এমনটাই আশা করা হচ্ছে।সেবক থেকে ট্রেনে চড়ে রংপো পৌঁছতে আর মাত্র মাঝের কয়েকটা দিন। তখন কোলকাতা থেকে সিকিমের(Sikkim) দূরত্ব হয়ে দাঁড়াবে মাত্র কয়েক ঘন্টার।
কোলকাতা থেকে সরাসরি ট্রেনে সিকিম যাওয়ার সুবিধা দিয়ে যাত্রীরা আরও সহজে এবং দ্রুত সিকিম পৌঁছাতে পারবেন। এটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় একটি রুট হবে এবং সিকিমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য একটি সহজ মাধ্যম হবে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
রেল লাইন বিস্তারের ফলে সিকিমের(Sikkim) অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, সিকিমের শিক্ষার্থীরা এবং চাকরিজীবীরা অন্যান্য অঞ্চলে যাতায়াত করতে সুবিধা পাবেন। স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রেও রেল যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
সিকিমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রেলযোগাযোগের মাধ্যমে আরও প্রচার পাবে। পর্যটকরা সহজেই সিকিমের(Sikkim) বিভিন্ন পর্যটন স্থানে যেতে পারবেন। তবে, রেল লাইন নির্মাণকার্যে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং স্থানীয় জনগণের সংস্কৃতির প্রতি পুরো সম্মান প্রদর্শন করা হচ্ছে।
পরিশেষে
স্বপ্নের এই রেলপথের কাজ সম্পন্ন হলে ভারতবর্ষের রেল মানচিত্রে নতুন সংযোজন হতে চলেছে সিকিম(Sikkim) রাজ্য। সিকিমে রেল লাইনের বিস্তার এবং রংপো স্টেশন নির্মানকাজ উদ্বোধন, ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি মাইলফলক।
এটি সিকিমের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। এছাড়া, এটি পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং সিকিমের(Sikkim) অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।