Published By: Riya Mukherjee
Last Updated: 7June, 2024, 10:30am (IST)
নিউ দিল্লী: রিক্সা চালকের মেয়ে কামিয়া জানি(Kamiya Jani), সফল ইউটিউবার, তাঁকে সম্মান জানিয়েছেন খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী। আজকে তিনি সারা দেশে পরিচিত।
Table of Contents
কামিয়া জানির(Kamiya Jani) শৈশব ও শিক্ষাঃ-
কামিয়া জানি এক সম্ভাবনাময় মেয়ে, যার শৈশবের গল্পটা আর দশটা বাচ্চার মতো ছিল না। তার জীবন ছিল কঠোর বাস্তবতার সামনে এক অবিরাম যুদ্ধের মিছিল। ছোটবেলা থেকেই আর্থিক সংকট ছিল তার জীবনের নিত্যসঙ্গী। বাবা-মা কঠোর পরিশ্রম করতেন, তবু সংসার চালাতে তাদের প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে হতো।
১৯৮৮ সালের ২৫শে মে মুম্বইয়ের একটি দরিদ্র পরিবারে কামিয়া(Kamiya Jani) জন্ম গ্রহন করেন। প্রবল আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। পরিবারে আয়ের উৎস বলতে ছিল তার বাবার দুটো রিক্সা। সেগুলো তার বাবা সামান্য টাকায় ভাড়া দিতেন। এমন চরম, শোচনীয় আর্থিক অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও, তার বাবা-মা, তার প্রতি এতটুকুও কার্পন্য করেননি। তাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন এবং তার বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের জন্য বরাবর উৎসাহ দিয়ে গেছেন। কামিয়া আর.ডি. ন্যাশনাল কলেজে পড়াশুনা করে স্নাতক হয়েছেন। এবং তারপর তিনি জি.জে.আডবানী কলেজ থেকে আইন নিয়ে পড়াশুনা করে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
কামিয়া জানির(Kamiya Jani) কর্মজীবনে প্রবেশঃ-
প্রথমে তিনি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসাবে কাজ শুরু করেন। পরে কর্পোরেট লাইফস্টাইল, ব্যক্তিগত অর্থ, কর্পোরেট ভ্রমন, সৌন্দর্য, স্টাইল, স্বাস্থ্য, ফিটনেস ছাড়াও আরো অনান্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর কাজ করেছেন। কামিয়ার কেরিয়ারের গ্রাফ উল্ল্যেখযোগ্যভাবে মোড় নেয় ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে। এই সময় তিনি ইউটিউব এ নিজের চ্যানেল খোলার সিদ্ধান্ত নেন। এবং ‘কার্লি টেলস’ নামে একটি চ্যানেল চালু করেন। প্রথমে একটি ব্যক্তিগত ডাইনিং ও ভ্রমন ব্লগ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং তারপর তো ইতিহাস সৃস্টি করলেন।
উদ্যগপতি কামিয়া জানি(Kamiya Jani):-
বাইরে থেকে সহজ মনে হলেও, কামিয়ার যাত্রাপথ কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না। একটা সময় তিনি সপ্তাহের ৭ দিনই প্রায় ১৪ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করতেন। তার এই সফলতার শিখরে পৌঁছতে সময় লেগেছে প্রায় ছ’টি বছর। বর্তমানে তিনি ভ্রমন, নতুন নতুন অজানা, অচেনা জায়গা অন্বেষণ, খাবারের খোঁজে বিভিন্ন ছোট, বড় বেঁস্তরাঁয় যাওয়া, তারকাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া ইত্যাদি নানারকমের ভিডিও তৈরি করেন এবং সেগুলিই সোস্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেন তার অনুগামীদের উদ্দ্যেশে। তিনি এখানেই থেমে থাকেন নি, চালু করেছেন নিজের রেঁস্তরা, শুরু করেছেন নিজের ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল অ্যাপ ‘কার্লি টেলস’ এবং আরও কিছু। এখন তিনি যে শুধু মোটা টাকা আয় করেন তাই নয়, তার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অনেক অনেক অচেনা,অজানা জায়গা এবং অখ্যাত জনপদ আলোকিত হয়েছে।
সফল ইউ টিউবার কামিয়া জানি(Kamiya Jani):-
অসম্ভব জনপ্রিয় ইউটিউবার কামিয়া জানির শূন্য থেকে শুরু করে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানোর গল্পটা রুপকথার গল্পের থেকে কোন অংশে কম নয়। জনপ্রিয় এই ইউটিউবারের যে চ্যানেলটির মধ্য দিয়ে তার ইউটিউব এ আত্মপ্রকাশ, সেই চ্যানেলেরই নাম হল ‘কার্লি টেলস’। তার এই চ্যানেলটিতে চমকে যাওয়ার মতো সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা রয়েছে। ‘কার্লি টেলস’ এ তাঁর মোট সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২.৯৭ মিলিয়ন। শুধু এখানেই শেষ নয়, ইনস্টাগ্রামেও তাঁর সমান উপস্থিতি রয়েছে। ইনস্টাগ্রামেও তাঁর হাজার হাজার ফলোয়ার রয়েছে। ইনস্টাগ্রামে তাঁর মোট ফলোয়ারের সংখ্যা ৭ লক্ষ্য ৯৮ হাজার।
কামিয়ার চ্যানেল যখন লক্ষ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার অতিক্রম করে, তখন সে বুঝতে পারে তার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল তার অধ্যবসায় এবং ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার। আর্থিক সংকটের মধ্যে থেকেও সে কখনো হাল ছাড়েনি। তার পরিশ্রম, মেধা এবং ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে সে তার জীবন বদলে দিতে পেরেছে।
কামিয়া জানির(Kamiya Jani) জাতীয় সম্মান প্রাপ্তিঃ-
সম্প্রতি আমাদের দেশের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ন্যাশনাল ক্রিয়েটর’স অ্যাওয়ার্ড এর অনুষ্ঠানে সেরা ভ্রমন ব্লগার হিসাবে ইউটিউবার কামিয়া জানিকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরষ্কারে সম্মানীত করেছেন। আজ তিনি তার পরিবারকে গৌরবান্বিত করেছেন। আজ তিনি সকলের পরিচিত একটি মুখ।
উপসংহারঃ-
কামিয়া জানির(Kamiya Jani) গল্প আমাদের শিখিয়ে দেয়, সংকট যতই গভীর হোক না কেন, অধ্যবসায় এবং সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সবকিছুই সম্ভব। ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার যে একজন মানুষকে কীভাবে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে, কামিয়ার জীবন তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত