Headlines

ভারতের রাস্তা এবার ছেয়ে যাবে ইলেকট্রিক গাড়িতে।কেন্দ্রের এই সিধান্তের কারণ কি….

Published By: Anjan Majumder

Last Updated: 7June, 2024, 8:30 am (IST)

নিউ দিল্লী: কেন্দ্রের এমন সিধান্ত একদিকে যেমন পরিবেশ বাঁচাবে, অন্যদিকে তেমনই রাস্তায় খনিজ জ্বালানী চালিত গাড়ীর সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকবে। আবার বিদেশী গাড়ী সংস্থাগুলি এলে প্রতিযোগীতা যেমন বাড়বে, তেমনই ভারতের বৈদ্যুতিক গাড়ীর(Electric Vehicle)) বাজার বৃহদ থেকে বৃহদত্তর হবে।

ভূমিকা

বর্তমান যুগে পরিবেশ দূষণ একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। খনিজ জ্বালানীর পরিবর্তে, পরিবেশ বান্ধব জ্বলানী যেমন- বৈদ্যুতিক, বয়ো-সিনজি কিংবা হাইড্রোজেন চালিত গাড়ির উপর জোর দিতে চাইছে। জীবাশ্ম জ্বালানী চালিত যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। এই সমস্যা সমাধানে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী চালিত গাড়ির উপর বেশী করে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বৈদ্যুতিক চালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে এবং এর আমদানি করের উপর বিশেষ ছাড়ের সিধান্ত নিয়েছে।

জীবাশ্ম জ্বালানী চালিত গাড়ির সমস্যাবলী

জীবাশ্ম জ্বালানী যেমন পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি জ্বালিয়ে গাড়ি চালানোর ফলে ব্যাপক পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয়। বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহউস গ্যাসের উপাদান বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল এই জীবাশ্ম জ্বালানী। আর এই গ্রীনহাউস গ্যাসের উপাদান বৃদ্ধি, যেটি সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণও বটে। জলবায়ু পরিবর্তন, যেমন- বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, আবহাওয়ার পরিবর্তন ইত্যাদি। সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এছাড়া বায়ুমণ্ডলে গ্রীনহাউস গ্যাসের উপাদান বৃদ্ধি, যার সরাসরি প্রভাব রয়েছে মানব স্বাস্থ্যের উপর। মানব শরীরে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, যক্ষ্মা কিংবা ক্যান্সার এর মতো রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ হল এটি। প্রাকিতিক ভারসাম্য নষ্ট-র ক্ষেত্রেও বায়ুমণ্ডলের গ্রীনহাউস গ্যাসের উপাদান বৃদ্ধির ভুমিকা রয়েছে। তাছাড়া, জীবাশ্ম জ্বালানীর মজুদ সীমিত হওয়ায় ভবিষ্যতে এদের প্রাপ্যতা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

Electric Vehicle

পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী ও তার গুরুত্ব

পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী বলতে এমন জ্বালানী বোঝায় যা ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা কম হয়। এর মধ্যে প্রধানত বৈদ্যুতিক, সৌর, জলবিদ্যুৎ ও বায়ু শক্তি উল্লেখযোগ্য। এই জ্বালানীগুলি ব্যবহার করে যানবাহন চালানোর ফলে বায়ু দূষণের মাত্রা অনেক কমে যায় এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস পায়। ফলে, দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) গুরুত্ব ও সুবিধা

বৈদ্যুতিক গাড়ি বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় পরিবেশ বান্ধব যানবাহন হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ধরনের গাড়ি চলাচলের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এবং এর ফলে কোনো ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয় না। বৈদ্যুতিক গাড়ির কিছু প্রধান সুবিধা হল:

  1. শূন্য নির্গমন: বৈদ্যুতিক গাড়ি চালানোর সময় কোনো ধোঁয়া নির্গত হয় না, ফলে বায়ু দূষণ কমে।
  2. নিম্ন অপারেটিং খরচ: জীবাশ্ম জ্বালানীর তুলনায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং কম ব্যয়বহুল।
  3. নিঃশব্দ যানবাহন: বৈদ্যুতিক গাড়ি চলাচলের সময় শব্দ দূষণ হয় না।
  4. সরল রক্ষণাবেক্ষণ: বৈদ্যুতিক গাড়ির যন্ত্রাংশ কম এবং সহজে রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য।
  5. অব্যবহৃত শক্তির ব্যবহার: পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যায়।

সরকারের উদ্যোগ ও নীতি

কেন্দ্রীয় সরকার, একদিকে যেমন পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী চালিত গাড়ি উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশীয় উদ্যোগপতিদের বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে আসছে, সেইসঙ্গে বৈদ্যুতিক গাড়ি(Electric Vehicle) আমদানির উপর কর ছাড় দেওয়ার মতো একটি বহুচর্চিত সিধান্ত দীর্ঘ টালবাহানার পর সাম্প্রাতিকালে নিয়েছে ।

সরকারের কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ হল:

  1. আর্থিক প্রণোদনা: বৈদ্যুতিক গাড়ি(Electric Vehicle) কেনার জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, যেমন ভর্তুকি ও ট্যাক্স রিবেট।
  2. চার্জিং স্টেশনের বৃদ্ধি: বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক(Electric Vehicle) গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে।
  3. প্রযুক্তিগত উন্নয়ন: বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সরকারী ও বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
  4. জনসচেতনতা: বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) সুবিধা নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
  5. শুল্ক ছাড়: বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে বিদেশ থেকে উন্নত মানের গাড়ি আমদানি করা যায়।

আমদানি শুল্কের উপর ছাড়ের প্রভাব

বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) আমদানি শুল্ক কমানো হলে এর ফলে বিদেশ থেকে উন্নত মানের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি সহজ হবে এবং দাম কমবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ সহজেই বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে উৎসাহিত হবে। এছাড়া, বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রাপ্যতা ও বৈচিত্র্য বাড়বে, যা ক্রেতাদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। সবমিলিয়ে, বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ পাবে এবং পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাব্য সমাধান

বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) প্রচলনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলি হল:

  1. চার্জিং পরিকাঠামো: পর্যাপ্ত চার্জিং স্টেশন না থাকলে বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) ব্যবহার সীমিত হবে। এর সমাধানে চার্জিং স্টেশন বাড়াতে হবে।
  2. ব্যাটারি প্রযুক্তি: উন্নত মানের ব্যাটারি ও এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যাটারির দাম কমানো ও পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা বাড়াতে গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন।
  3. মূল্য: বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) প্রাথমিক খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। এর সমাধানে সরকারী ভর্তুকি ও প্রণোদনা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
  4. জনসচেতনতা: বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রচারাভিযান চালাতে হবে।

উপসংহার

পরিবেশ দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানী চালিত গাড়ির পরিবর্তে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী চালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। বৈদ্যুতিক গাড়ি এ ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ির(Electric Vehicle) আমদানি করের উপর বিশেষ ছাড়ের সিদ্ধান্ত একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই ধরনের উদ্যোগের ফলে আমাদের পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ভারতের সবচেয়ে সুন্দর রেল স্টেশনগুলি… ভারতের কম পরিচিত উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থলগুলি… ভারতের ব্যস্ত রেল স্টেশনগুলি… দক্ষিণ ভারতীয় প্রাতঃরাশের সেরা খাবারগুলি… ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকারী দেশগুলি…