Headlines

চিনের জাহাজ মুম্বই বন্দরে আটক ! জাহাজটিকে আটক করার কারণ কি….

Published by: Anjan Majumder

Last Updated: 8 June, 2024, 6:30 am (IST)

Mumbai: চিন(China) থেকে পন্য নিয়ে পাকিস্তানের করাচি বন্দরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল একটি জাহাজ। জাহাজটিতে মাল্টার পতাকা লাগানো ছিল। সন্দেহজনক হওয়ায় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী জাহাজটিকে মুম্বইয়ের নব সেবা বন্দরে আটকে দেয়। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রাজনৈতিক পরিসরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ঘটনার বিবরণ

জাহাজটি চিন(China) থেকে বৈধভাবে পণ্য পরিবহনের জন্য যাত্রা শুরু করেছিল এবং এটি করাচি বন্দরে পণ্য সরবরাহের জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মুম্বাই বন্দরে পৌছানোর পর ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজটি আটক করে। গোপন তথ্য পেয়ে শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা সিমএ-সিজিম অ্যাটিলা নামে মাল্টার পতাকা লাগানো জাহাজটিকে বন্দর না ছাড়ার নির্দেশ দেন।এরপর শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগে জাহাজটিতে চিরুনী তল্লাশি চলায়। তল্লাশিতে এমন কিছু কিছু যন্ত্র পাওয়া গিয়েছে যেগুলি আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীর মানবজাতির পক্ষে খুবই বিপদজ্জনক।যন্ত্র গুলির মধ্য কোনটি পারমানবিক অস্ত্র তৈরি এবং কোনোটি ব্যালিস্টিক মিশাইল তৈরির সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, জাহাজটিতে বেআইনী পণ্য রয়েছে এমন একটি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভারতের কাস্টমস এবং নিরাপত্তা সংস্থার যৌথ অভিযান চালিয়ে জাহাজটি আটক করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি চালানো হয়েছে।

China's Ship

ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি

ভারত সরকার জানিয়েছে যে, তারা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক নীতিমালা অনুসরণ করছে এবং কোনো ধরণের বেআইনী কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য তাদের নৌবাহিনী সদা সতর্ক। তারা আরও বলেছে, এই ধরণের তল্লাশি ও আটক প্রক্রিয়া নিয়মিতভাবেই পরিচালিত হয়ে থাকে এবং এতে বৈধ বাণিজ্যের কোনো ক্ষতি হয় না। তল্লাশিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ন যে যন্ত্রটি পাওয়া গিয়েছে সেটি হল একটি সিএনসি(কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল) মেশিন। এই যন্ত্রটি খুব সূক্ষ হিসেব নির্নয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সামরিক বা সাধারনের ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটির উপর আন্তর্জাতিক নানারকম বিধিনিষেধ রয়েছে। ভারতের দাবি, এই জাহাজের এইসব পণ্য আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় পড়ে।

চিনের(China) প্রতিক্রিয়া

চিন সরকার ভারতের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং তাদের জাহাজ অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি করেছে। তারা ভারতের এই কার্যকলাপকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে এবং বলছে, তাদের জাহাজে কোনো ধরনের বেআইনী পণ্য ছিল না। চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের প্রতি এই পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে যে, এই ধরণের ঘটনা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পরিসরে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর এর প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

ঘটনাটির প্রভাব

জাহাজ থেকে পাওয়া পণ্য লেনদেনের যাবতীয় নথি অনুধাবন করে শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা অনুমান করেছেন যে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের একটি সংস্থা ঐসব পণ্য, চিনের সাংহাইয়ের নামকরা একটি সংস্থার থেকে ক্রয় করেছে। কিন্তু ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি বিভিন্ন মারফত জানতে পেরেছে ঐ পণ্যগুলির সব নথিই ভুয়ো। আসলে চিনের একটি সংস্থা ঐসব পণ্য পাকিস্তানের কসমস ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাছে পাঠাচ্ছিল। আর এই কসমস ইঞ্জিনিয়ারিংই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগকে তাদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় যন্ত্র সরবরাহ করে থাকে। এই সংস্থাটির উপর সারা বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির নজর রয়েছে

এই ঘটনাটি ভারত ও চিনের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চিনা(China) বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো এখন ভারতের বন্দরে পণ্য পরিবহনে আরও সতর্ক হবে এবং এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে তারা বিকল্প পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। পাশাপাশি, পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়তে পারে, কারণ এই জাহাজটি পাকিস্তানে পণ্য সরবরাহের জন্য যাচ্ছিল।

সমাধানের উপায়

এই ঘটনার সমাধান হতে পারে দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে। দুই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক আয়োজন করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। ভারতের পক্ষ থেকে একটি স্বচ্ছ তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাহাজটির পণ্য পরীক্ষা করা উচিত এবং যদি কোনো বেআইনী পণ্য না পাওয়া যায়, তবে তা অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত। চিনের(China) পক্ষ থেকেও পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিমালা মেনে চলা উচিত।

উপসংহার

ভারত ও চিনের(China) মধ্যে জাহাজ আটকের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন এক সংকটের সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা অপরিহার্য। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি ও নীতিমালা অনুসরণ করে ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

ভারতের সবচেয়ে সুন্দর রেল স্টেশনগুলি… ভারতের কম পরিচিত উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থলগুলি… ভারতের ব্যস্ত রেল স্টেশনগুলি… দক্ষিণ ভারতীয় প্রাতঃরাশের সেরা খাবারগুলি… ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকারী দেশগুলি…