Headlines

টাকার প্রলোভনে পড়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ! পরিযায়ী শ্রমিকরা ছাড়া আর কারা কারা জড়িত এই চক্রে …

Published By: Kingshuk Roy

Last Updated: 6 June, 2024, 10.30 am (IST)

কোলকাতা: মোটা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant workers) আনা হয়েছিল প্রশ্নপত্র পাচার করতে! মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আভ্যন্তরীন বৈঠকে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। পর্ষদ জানিয়েছে এই চক্রে আরও অনেকেই জড়িত।

পরিযায়ী শ্রমিকদের(Migrant workers) নামে আভিযোগঃ-

মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র পাচার করতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant workers) আনা হয়েছিল ! প্রথম আর এ কমিটির বৈঠকের পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এমনই চাঞ্চল্যকর বিবৃতি দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রশ্নপত্র পাচার চক্রে যুক্ত হওয়ার জন্য তাদের মোটা টাকার প্রলোভনও দেওয়া হয়েছিল।

Migrant workers

পরীক্ষার সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant workers) কাজকর্মঃ-

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রথম আর এ কমিটির বৈঠকের আলোচনায় জানা গিয়েছে, আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গা, যেমন- দিল্লী, মুম্বাই, কোচি, চেন্নাই, পুনে সহ অনান্য প্রান্ত থেকেও এই পরিযায়ী শ্রমিকরা (Migrant workers) নিজেদের কাজকর্ম ফেলে রেখে তাদের নিজ নিজ জেলায় চলে এসেছিলেন গত ২ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করবার জন্য।

মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকলীন কোন একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে কিছু কিছু ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখে তাদেরকে পরীক্ষাকক্ষ থেকে আলাদা করেছিলেন পরিক্ষক। পরে ঐ সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রশ্নপত্র পাচার চক্রের এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে এসেছে। আমাদের রাজ্যের মালদা জেলা থেকে সর্বোচ্চ ৩১ জন এমন ছাত্র-ছাত্রী মোবাইল ফোন সমেত হাতেনাতে ধরা পড়েছিল। পরিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড সহ অনান্য প্রযুক্তিগত সাহায্য করতে ঐসব পরিযায়ী শ্রমিকরা(Migrant workers) মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছিলেন। এই পরিযায়ীরা কিভাবে কাজ করতেন ? প্রথমে তারা নিদিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষার দিন পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে মোবাইলের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বের করে তা কোনো অজ্ঞাত জায়গায় পাচার করতেন এবং কিছু সময় পরে ঐ সংশ্লিষ্ট প্রশ্নপত্রের উত্তর কোনো অজ্ঞাত ব্যক্তির থেকে নিয়ে তা পুনরায় ঐ পরীক্ষাকেন্দ্রের নিদিষ্ট ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সরবরাহ করতেন।

এমনও ঘটেছে পরীক্ষার্থীদের মধ্য কেউ কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে হয়তো পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকে নি, কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রের জানালার বাইরে থেকে কোনো অজ্ঞাত ব্যাক্তি সেটি সরবরাহ করেছে।

পরীক্ষার্থী হিসেবে পরিযায়ী শ্রমিকদের(Migrant workers) চিহ্নিত করনঃ-

পর্ষদ বিভিন্ন মারফত জানতে পেরেছে, বর্তমানে এমন আট জন পরীক্ষার্থীর সমন্ধে, তারা পরিযায়ী শ্রমিক (Migrant workers) হিসেবে রাজ্যের বাইরে কাজে চলে গিয়েছেন, যারা কিনা পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন হাতেনাতে ধরা পড়েছিল মোবাইল ফোন সমেত।

সোস্যাল মিডিয়ার ব্যাবহারঃ-

প্রথমে পরীক্ষা শুরুর গোড়ার দিকে ‘ এমপি ২০২৪ কোশ্চেন আউট’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। ঐ গ্রুপের মেম্বার সংখ্যা ছিল ১৫২ এবং ৭ জন অ্যাডমিন ছিল। পরে আরও অনেকগুলি ছোটোখাটো এমন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিল কিছু পরীক্ষার্থী। তেমনই এক পরীক্ষার্থী কাম গ্রুপ অ্যাডমিনকে, মালদা জেলায় পর্ষদের আঞ্চলিক কমিটি তিন বছরের জন্য পরীক্ষায় না বসার সিন্ধান্ত নিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কলেজের এক ছাত্র এবং এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার এক পরীক্ষার্থীও এই চক্রে যুক্ত ছিলেন তা জেরার মাধ্যমে উঠে এসেছে।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বৈঠকঃ-

পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরীক্ষাকেন্দ্রের ভ্যেনু সুপারভাইজার, সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার ইনচার্জ, ইনভিজিলেটর এবং জেলা কনভেনরদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে যে, যাঁরা এই প্রশ্নপত্র পাচারের কাজে নিযুক্ত ছিলেন তাঁরাই অভিভাবক রুপ ধারন করে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতেন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন। আবার অন্যদিকে, প্রশ্নপত্র সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে বেরিয়ে এলে, সেই সব প্রশ্নপত্রের উত্তর বা সমাধান করার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন স্থানীয় বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের স্বীকারোক্তিঃ-

তবে এদিনের বৈঠকে, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন সমেত হাতেনাতে ধরা পড়া বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী একবাক্যে স্বীকার করেছে তারা নিজেদের ভাই, বোন অথবা আত্মীয়দের মোবাইল ফোন ও সিম কার্ডসহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত সাহায্যের জন্য এসেছিল কিন্তু টাকা বা অন্য কিছুর প্রলোভনে নয়। তাদের দাবি সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে পারবে না, এই আশঙ্কা থেকেই প্রশ্নপত্র পাচার চক্র গঠিত হয়েছিল। তাদের মধ্যে কিছু পরীক্ষার্থী জানিয়েছে যে, তাদের কাঁচা বাড়ি এবং ঐ নিদিষ্ট সময় বড়িতে কেউ থাকে না, ফলে ফোন চুরি হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। তবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন তা জমা করে নি, এই উত্তর তারা দিতে পারে নি।

তবে শেষ পর্যন্ত একটানা জেরা করার পর, তারা স্বীকার করে নেয় টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র পাচারের প্রসঙ্গটি।

ভারতের সবচেয়ে সুন্দর রেল স্টেশনগুলি… ভারতের কম পরিচিত উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থলগুলি… ভারতের ব্যস্ত রেল স্টেশনগুলি… দক্ষিণ ভারতীয় প্রাতঃরাশের সেরা খাবারগুলি… ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকারী দেশগুলি…